কোয়ারেন্টাইনে থেকে অঢেল সময় পাচ্ছি, সেই সুযোগে উকুন বাছার মতো করে পত্রিকা পড়ছি, ফেসবুকের পোষ্ট পড়ছি আজব সব কারবার
বাংলাদেশের এই খবর গুলো দেখলে অন্তর আত্মা কেঁপে ওঠে। মানবিকতা বিহীন জীবন।
আমি নিজেই এবার দেশে গিয়ে অনেক ক্ষেত্রে ফেইস করেছি। এই করোনা যে কত কি দেখার বোঝার, উপোলব্ধী করার সুযোগ করে দিলো।
কার ঘরে কয়টা গরু ছাগল আর কার দেশে কয়টা আবাল আছে করোনা কালে তারা মুখ বের করে নিজের পরিচয় নিজেই দিয়েছে।
পরিবারটিকে এমন করে মরার আগে মারার কোনো মানে হয় ! যে কোন ব্যবস্থা করে হলেও ওদের সাহায্য করা যায়। জানি না কত টুকু সত্য মিথ্যা তবে আমি এই টুকু বুঝেছি, এই দেশের সরকারের সুখ সুবিধা মানবিকতা উদারতা দেখে সত্যি বিশ্মিত। আমরা যারা হোটেল কোয়ারেন্টাইনে আসলাম।
প্লেনে উঠে ভেবেছিলাম, না জানি ওরা কেমন করে, ছি : ছি : দূর দূর করবে না তো ? আমাদের চিন্তায় পানি ফেলে দিয়ে দেখালো ওরা, সেই এয়ারপোর্ট থেকেই শুরু হলো ওদের যত্ন, হাসি মুখে কথা বলা, সম্ভাষণ, এবং বার বার দেখেছি সবার মুখেই হাসি মুখে বলতে, ওয়েলকাম। সরি তোমাদের ফিরিয়ে আনতে লম্বা কিউ মেইনটেইন করতে করতে এতোটা দেরী হলো এই দেশে। এবং দেখিনি সব মানুষকে পিপি পরে রবোটিক হয়ে ২০-৩০ মিটার দূরে থাকতে আমাদের কাছ থেকে।
বরং আমরা সঙ্কোচিত হয়ে টেবিলের কলম ছঁুয়েছি, ইভেন আমাদের ব্যাগ গুলো তারা যত্নে তুলে নিয়ে ঘরে দিয়ে এসেছে, সেহেরী থেকে সন্ধ্যা অবধি এতো এতো খাবার দেয়, যা কিছু চাহিবা মাত্র হাজির করে দেয়।
তবে কি এদের মৃত্যু ভয় নেই,? নাকি এরা অসেচেতন ?, না মোটেও তা নয়, এরা সবার উপরে মানবিক, এরা মরার আগে মেরে ফেলে না। মানসিক যন্ত্রনা দিয়ে। এজন্য এরা করোনা পরিস্থিতি কোন পর্যায়ে আছে নিউজ পড়লেই বুঝতে পারবেন। কিছুদিন আগেও দেখেছেন কত বড় একটা দাবানল হাদসা হয়ে গেল, হয়ত বলবেন বড় দেশ, ধণী দেশ, ওরা পারে ! আমাদের দেশ গরীব ! ঠিক বলেছেন গরীব। কিন্তু এটাও তো ঠিক যে মানবিকতা হীন আমরা, বড্ড বেশী স্বার্থপর, তা না হলে সংকট কালে ত্রান চুরি করে কেউ, প্রয়োজনীয় জিনিস পত্রের দাম তুঙ্গে তুলে মানুষকে হয়রান করে ?
একজন সরকারের উপরেই যেন আমরা হাত ধুয়ে বসে আছি সকল কাজের কাজী বানিয়ে, কি করে সম্ভব এমন অনিয়মের দেশে সুস্থ হয়ে কাজ করা। স্বয়ং আল্লাহ রক্ষা করুন। ত্রান দেয় চার আনা চোরেরা ছবি তুলে পোষ্ট দেয় বারো আনা, শো অফ করে সরকারকে দেখায়, অসৎ নেতারা বুলি ঝারে, সরকারকে তেল বাজী করে, মূর্খের মতো কথা বলে, মনে হয় যেন সরকার বাহাদুর বোঝে না ওদের কথা।
নিয়ম ভাঙ্গার ছলে আমরা দূষিত আজ সর্বক্ষেত্রে। অন্যদের দেখেও শিখি না। এদেশের কথা ভালো বল্লাম দেখে কারও গায়ে নুন ছিটাইনি কিন্তু শুধু বোঝালাম কি করে মানবিক হওয়া যায়। সেটার একচিমটি নজীর দিলাম একটু, নিজেদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে।
আসল কথা হলো এমন খবর গুলো দেখলে
মাথা ঠিক রাখা দায়। বিগরে যায়। যেমন বিগরায় বারো রকমের জিলাপীর প্যঁাচ দেখে। আজ সকাল আর লান্চে জন্য যদি এতো গুলো খাবার আসে, আর গরীব দেশে থেকে ফিরিয়ে নিয়ে এসেও যদি আমাদেরকে ফাইভ স্টার হোটেলে রেখে সার্বক্ষনিক সুবিধার জন্য তৎপর থাকে, তবে কেন নতজানু হয়ে এই সংকট সময়ে কৃতজ্ঞতা জানাবো না আপনারাই বলুন।
দার্শনিক বোধ তাড়িত সময় সচেতন নিষ্ঠাবান কবি। চলমান বাস্তবতাকে ইতিহাস-ঐতিহ্যের পরম্পরায় জারিত করে তিনি কাব্য রূপান্তরে অভ্যস্ত। কাব্য রচনার পাশাপাশি ক্ষেত্রসমীক্ষাধর্মী মৌলিক গবেষণা ও কথাসাহিত্য সাধনায় তাঁর নিবেদন উল্লেখ করার মতো। গবেষণাকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত ফোকলোর ও লিখিত সাহিত্যঃ জারিগানের আসরে “বিষাদ-সিন্ধু” আত্তীকরণ ও পরিবেশন পদ্ধতি শীর্ষক গ্রন্থের জন্য সিটি-আনন্দ আলো সাহিত্য পুরস্কার ২০১২ অর্জন করেছেন।