মুক্তিযোদ্ধা ডা: জাফরউল্লাহ চৌধুরী

ডা: জাফরউল্লাহ চৌধুরী মুক্তিযোদ্ধা এ নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু জাফরউল্লাহ চৌধুরী সেই মুক্তিযোদ্ধা যিনি স্বার্থোন্মত্ত হয়ে যে কারো সংগে তার শুইতে বসতে সমস্যা নেই। যেমন এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের সংগে তিনি ছিলেননা। কারন তিনি ছিলেন এরশাদের বিশ্বস্ত দালালদের একজন। বিএনপির সংগে তিনি যে ঘনিষ্ঠ এর কারন তার আওয়ামী লীগ বিরোধী চীনপন্থী রাজনীতি। তবে জাফরউল্লাহ চৌধুরী বঙ্গবন্ধু বলেন। কারন তার সাভারের জমি বঙ্গবন্ধুর দেয়া।

সম্প্রতি হঠাৎ জাফরউল্লাহ দাবি করলেন আওয়ামী লীগের চেয়ে বেশি মুক্তিযোদ্ধা বিএনপিতে! এর একদিনের মাথায় মেজর (অব:) হাফিজ বিএনপিতে মুক্তিযোদ্ধাদের করুন অবস্থা তুলে ধরেন। মেজর হাফিজ সহ বিএনপির মুক্তিযোদ্ধাদের বেশিরভাগ অবশ্য হুইসেল মুক্তিযোদ্ধা! এরা বঙ্গবন্ধু বলেননা। বলেন শেখ মুজিব বা শেখ সাহেব।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ যে একটি রাজনৈতিক গণযুদ্ধ তা এরা জানেননা মানেননা। হাঁটুর বুদ্ধিতে সব জানা বোঝা যায়না। ১৯৫২ থেকে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের শুরু। আর মেজর হাফিজরা মনে করেন জিয়ার মতো কেউ একজন হুইসেলে ফু দিয়েছেন অথবা ড্রামে উঠে দাঁড়িয়েছেন আর যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে দেশ স্বাধীন হয়ে গেছে!

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে আরেক গ্রুপ আছেন যারা মনে করেন তারা ভারতে যান নাই তাই তারা আসল যোদ্ধা! অথচ মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব মুজিবনগর সরকার ভারতেই ছিল। এর নেতৃত্বে যুদ্ধ হয়েছে। দেশের ভিতরে আরেক গ্রুপ মুক্তিযোদ্ধা আছেন তারা শুধু পাকিস্তানি বাহিনী না মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধেও যুদ্ধ করেছেন। এরাও বঙ্গবন্ধু বলেননা!

মুক্তিযুদ্ধ তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যাওয়ায় এই দ্বন্দ্বগুলো লম্বা হতে পারেনি। লম্বা হয়েছে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর। ক্ষমতার জন্য এরা জিয়া এরশাদের ক্ষমতার সহযাগী হন। রাজাকার যুদ্ধাপরাধীদের সংগে উঠবস করতে এদের সমস্যা ছিলোনা। এভাবে ক্ষমতার স্বার্থ দ্বন্দ্বে এরা মুক্তিযুদ্ধের মূলধারা বিচ্যুত হন। এরাই এখন মেজর হাফিজ। না ঘরকা না ঘাটকা।

মুক্তিযুদ্ধের নিজস্ব কিছু লক্ষ চরিত্র ছিল। প্রথম হলো অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ। মুক্তিযুদ্ধের নেতার নাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি আমাদের জাতির পিতা। গনতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা, এই চারটি মূলনীতির ভিত্তিতে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধের শ্লোগান ছিল জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু। মুক্তিযোদ্ধারা অপারেশনে যাবার আগে শপথ নিয়ে স্লোগান দিতেন জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু। ফিরে এসে শ্লোগান দিতেন জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু। ১৬ ডিসেম্বরের আগেপরে যখন যে জনপদ শত্রুমুক্ত হয়েছে সেখানে মানুষ এই দুই শ্লোগান সহ রাস্তায় নেমে এসেছে। এসব নিয়ে আপনার কোন দ্বিমত আছে? আপনি আসলে মুক্তিযোদ্ধাই না।