কৃষাণ – কৃষাণীর মুখে সোনালী ফসলের হাসি

সব সাধকের বড় সাধক আমার দেশের চাষা। বৈশাখ মাসের শুরু থেকেই মাঠে মাঠে দেখা যায় কৃষকদের কঠিন পরিশ্রমের দৃশ্য, বৈশাখ মাসে যখন আমন ধান পেকে যায় তখন কৃষকরা ধান কাটা,ও মাড়াই এর কাজে অনেক ব্যস্ত থাকে।

শাহরাস্তি উপজেলায় এ বছর আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। এ উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম পর্যালোচনা করে দেখা গেছে গেলো বছর থেকে এ বছর ফলন বেশি,যার জন্য কৃষকেরা অনেক খুশি। বিভিন্ন প্রাকৃতিক দূর্যোগ উপেক্ষা করেও কৃষক ভাইয়েরা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে আমন ধানের ভালো ফলন পেয়েছে। মাঠে নামলেই দেখা যায় ভোরবেলা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কৃষকদের অক্লান্ত পরিশ্রমের দৃশ্য। কেবল কৃষাণ নয় কৃষাণীরাও ধান গোলাভরার কাজে লেগে পড়েছে। শাহরাস্তির প্রসন্নপুর গ্রামের বিভিন্ন কৃষকদের মুখ থেকে জানা গেছে,গেলো বছরগুলোর তুলনায় এ বছর তাদের খরচের তুলনায় ধানের ফলন ভালো হয়েছে,যার কারণে তারা অনেক সন্তুষ্ট,তারো আরো জানান যে,বর্তমান কৃষিজাত পণ্য অনেক উন্নত এবং আধুনিক হওয়ায় তাদের আশানুরূপ ফল পেয়েছে।

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর কৃষাণ-কৃষানীরা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ধান কাটা থেকে মাড়াইয়ের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে। কেউ জমিতে খলা বানিয়ে, কেউবা বাড়ির আঙ্গিনা বা উঠোনে খলা বানিয়ে সেখানে ধানের ঘের তৈরি করে মেশিন বা মটকার উপর ধান জরাচ্ছে।

বিশেষ করে এ বছর বৃষ্টির তীব্রতা বেশি দেখে, কৃষকরা অনেকেই আগে আগে ধান কাটা শুরু করে দিয়েছে। ধান কাটা থেকে,খড়ের স্তুপ, মাড়াই ইত্যাদির জন্য পর্যাপ্ত শ্রমিক না থাকায় রংপুর থেকে কিছু মৌসুমি শ্রমিকদের দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে। গত কয়েক যুগ ধরে উপজেলার উত্তর ও দক্ষিণ মাঠগুলোতে আউশ এবং ইরিধান চাষাবাদ করা হচ্ছে। তবে দক্ষিণ অঞ্চলের মাঠগুলো নিচু হওয়ার কারণে ইরি-বোরো ছাড়া আর কোনো ফসল উৎপাদন করতে দেখা যায়না।

উপজেলায় প্রায় শতাধিক কৃষি মাঠ রয়েছে যা থেকে এ বছরেও ফসলের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৯ হাজার মেট্রিক টন। তবে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা সমানভাবে থাকলেও বর্তমানে কৃষকরা রবিশস্য চাষাবাদে বেশি মনোনিবেশ দিচ্ছে। এর কারণ হলো কৃষকেরা চলমান খরচের সাথে তুলনা করলে ধান বিক্রয় কালে ন্যায্য মূল্য পায় না।

দক্ষিণ অঞ্চলের মাঠগুলো থেকে একাধারে মাটি উত্তোলনের ফলে চাষাবাদে ব্যাঘাত ঘটছে। আর দিন দিন,অতিরিক্ত জনসংখ্যার বসতভিটার জন্য ফসলিজমি ব্যবহৃত হচ্ছে। তাছাড়া বিভিন্ন প্রাকৃতিক দূর্যোগও কৃষি ফলন হ্রাসের কারণ।