ছাএ জীবন পরম অধ্যবসায় এর জীবন। ছাএ জীবনের এর প্রতিটি মূহুর্তে থাকে নানা প্রতিবন্ধকতা। যদি সেটা হয় কোন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানের ছাএজীবন। তখন তার ছাএজীবন কেমন কাটে একটু ভেবে দেখছেন? এই মধ্যবিত্ত যেন তাকে বেদনাদায়ক করে তুলে। তখন তাকে পড়ালেখার পাশাপাশি অদূর ভবিষ্যৎ এর চিন্তা ও করতে হয়। পরম অধ্যবসায় এর মাধ্যমে তাকে পাড়ি দিতে হয় অদূর ভবিষ্যৎ এর দিকে। এভাবে চলেতে থাকে । আমার ছাএজীবনে এগিয়ে চলার প্রত্যয়!
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অধ্যায়নের মাধ্যমে শুরু হয় আমার ছাএজীবন।প্রাথমিক বিদ্যালয় টা যদি ও কিন্ডারগার্টেন স্কুল দিয়ে শুরু হয়। কিন্তু পরবর্তী শুরু হয় প্রসন্নপুর ব্র্যাক স্কুল থেকে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে না গিয়ে রাস্তায় ব্যাগ নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ছিলো বিভিন্ন বাহানা। কিন্তু এই বাহানা কাটিয়ে দিতে সাহয্য করে আমার শ্রদ্ধেয় “প্রিয়, রাজু আক্কেল”। যিনি আমাকে মিষ্টি ও চকলেট এর লোভ দেখিয়ে ওনার সাথে স্কুলে নিয়ে যেতো। এভাবে নিয়মিত প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাওয়ার প্রবণতা সৃষ্টি হয়।
যাই হোক হঠাৎ করে যেন পরিবারের মনে জেগে ওঠে তাদের একমাএ ছেলেকে শহরের ভালো কোন স্কুলে পড়ালেখা করাবে। এরপর আমার শ্রদ্ধেয় “ছোট মামা” জনাব,শফিকুর রহমানের মাধ্যমে আমাকে কুমিল্লা নিয়ে যায়। যদিও মামার অত্যন্ত ইচ্ছে ছিলো আমাকে মাদ্রাসায় পড়ানো। কিন্তু আমার ইচ্ছা ছিলো স্কুল এ পড়েছি স্কুল এই পড়বো।স্কুল এ ভর্তি হওয়ার জন্য কুমিল্লা ইবনে তাইমিয়া স্কুলে ভর্তি পরীক্ষা দিলাম। ভর্তি পরীক্ষায় পাশ করে পরিবারের সকলের ইচ্ছায় ইবনে তাইমিয়া স্কুলে ভর্তি হলাম। ভালো রেজাল্ট অর্জন এর মাধ্যমে শেষ হলো প্রাথমিক ও মাধ্যমিক ছাএজীবন।
উচ্চমাধ্যমিক পড়ালেখা ঠিক আগের মতো চলতে থাকে। হঠাৎ করে দেখা হয়ে যায় আমার শ্রদ্ধেয়,প্রিয় “শাহাদাত মানিক স্যার” এর সাথে! যিনি অস্ট্রলিয়া থাকেন। যার কথা মানুষের মুখে শুনতাম কিন্তু সরাসরি কোনদিন দেখিনি। স্যারের আগমনে স্যারকে দেখার সুযোগ হলো। এবং স্যারের গুরুত্বপূর্ণ কম্পিউটার ক্লাসে অংশগ্রহণ করার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। তিনি দরিদ্র মেধাবী ছাএ-ছাএীদের সবসময় সহোযোগিতা ও সাহয্য করেন। ছাএ-ছাএীর মেধা বিকাশে জন্য বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করে থাকেন। ছাএ-ছাএীদের বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা ও সাহয্য ও সহোযোগিতা করার জন্য স্যারকে আমার অনেক ভালো লাগে। সত্যি এমন মানুষের দেখা পাওয়া যেন ভাগ্যের ব্যাপার।স্যার, আপনি আমদের অনুপ্রেরণার উৎস !
উচ্চমাধ্যমিক যখন ভালো কাটতে লাগলো তখনি উঁকি দিলো ছাএজীবনের প্রথম ভালোলাগা। যার পরিধি ছোট ভাবলে ও একসময় যেন তা ব্যাপক আকার ধারণ করে। যা থেকে কোন ভাবেই যেন মুক্তি পাচ্ছিলাম না। আস্তে আস্তে পরিবর্তন শুরু হয় পড়ালেখা অবাক করে তুলে স্যারদের নজর। মনে পড়ে শ্রদ্ধেয়,প্রিয় “ইমরান স্যার” এর কথা যিনি আমাকে ভালো ছাএ হিসাবে অনেক আদর করতেন ও বুঝাতেন। বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা দিতেন। আজ খুব মনে পড়ে স্যারের দিক-নির্দেশনা গুলো। পড়ালেখার অবনতি ও রেজাল্ট এর অধপতনের মাধ্যমে শেষ হয় উচ্চমাধ্যমিক। আজো মনে কড়া নাড়ে সে উচ্চমাধ্যমিক এর রেজাল্ট।অনেক সময় কষ্টের তীব্রতায় আবেগে কেঁধে পেলি।
সব চাওয়া-পাওয়া হারিয়ে। নতুন করে স্বপ্ন দেখি সামনে এগিয়ে যাওয়ার। ইচ্ছে ছিলো ভর্তি হবো! স্বপ্নের “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়” কিন্তু ভাগ্যের পরিহাসে সে স্বপ্ন ও পূরণ হলো না। ভেঙ্গে গেলো পরিবারের স্বপ্ন! বড় ব্যংকার হওয়ার ইচ্ছে। অবশেষে স্থান হলো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এর অন্তরভুক্ত ইউনিভার্সিটি’তে।
জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় ছাএজীবন।এই জীবনে উপলব্ধি করে বুঝেছি স্বপ্ন হারানোর বেদনা! ছাএজীবনে আমি পরিবারের কাছ থেকে যেমন অনেক কিছু পেয়েছি। ঠিক তেমনি যেন তাদেরকে ভালো রাখার দায়িত্ব নিতে পারি। সে সাথে সমাজের মানুষ ও দেশের যেন সেবা করতে পারি।
মুচে যাক গ্লানি, মুচে যাক আমার সকল স্বপ্ন হারানোর কষ্ট! শুধু চাই যেন এগিয়ে চলুক আমার ছাএজীবনে সামনে এগিয়ে চলার দূর্বার প্রত্যয়।
লেখক, ক্রীড়া সাংবাদিক ও সমাজকর্মী