সিটি সেন্টারের মূর্তিটা

সিটি সেন্টারে প্রমান সাইজ মানুষের মত
মূর্তিটাকে দেখে, সামনে দাড়াই – দেখতে থাকি
অসম্ভব এক নিজেকেই দেখি, ধারণ করে আছি দু হাত বাড়িয়ে ;
হয়তো একই দ্বিধাতে, এক ঠায় সারাটা জীবন
না সামনে, না পিছনে – না ডানে, না বাঁয়ে;

হে, পথিক, তোমার হাত টা কি আমি পেতে পারি?
এতটুকু ছোঁয়া, না থাকুক ভালোবাসা, সামান্য করুনায়!

গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি – আহা কত দিন বৃষ্টি দেখি না
জমে যাওয়া ঠান্ডা বাতাস – আহা, জমে যাই না শীতে, সে অনেক দিন হলো;
কারো কারো মাথায় ছাতা মেলে ধরে কেউ কেউ
কেউ কেউ চোখ তোলে আকাশে – মনি’টা ধুয়ে নেয় হীম শীতল জলে
আহা, কত দিন হীম শীতল জলে দু চোখ ধুইনি –
পথিক, আমার এ চোঁখ দুটুকে কি – বৃষ্টির জলে ধুয়ে দিতে পারো? – পারবে?

হে, এলোমেলো পায়ে কোথায় যাচ্ছো? সূর্য টা সামনে ডুবেছে – ভেসে উঠবে পিছনে
অপেক্ষা করো – ধর্য ধরো – একটু পেছনে তাকাও – এ অন্ধকার থাকবে না সোনা

ঈশ্বর আমাকে দেখে – আমি দেখি না – দেখা যায় না
এই ঈশ্বরই আমাকে বানিয়েছে – সামনে তাকাবো বলে – আকাশ মুখী হবো?
এমন মূর্তি তো ঈশ্বর বানায় নি আমায়; সামনে তাঁর সৃষ্টিটাকেই দেখি আমি
হে, তুমি কি কোনো ঈশ্বর দেখো? মাথার উপরে? তারও উপরে?

দেখো – মুক্ত পাখিরাও কিন্তু একটা উচ্চতার পর – উড়তে পারে না আর
পারে কি? – খাঁচার পাখিরা ভাবে – পারে; হয়তো পারে, সেও পারবে
অথচ, পাখা ঝাপটিয়ে মুক্ত আকাশে উড়াটাই ভুলে গেছে এরই মধ্যে সে হয়তো
এরই মধ্যে হয়তো – বদলে গেছে বাতাসের রং – গতি, শব্দ – মেঘের আকার!

পথিক, বাতাসের রং কি তুমি দেখো? সুবাস কি পাও? অথবা
কোথাও নেই – বুকে নেয়ার মতো এতটুকু বাতাস – বুজতে কি পারো?
হে, চেয়ে দেখো – তোমার পায়ের নিচে কোন মাটি নেই এখন আর
কংক্রিট এ ছেয়ে আছে চতুর্দিক – মাটির ছোঁয়া কি এতটাই সহজ?

ঈশ্বরই আমায় – আমার পায়ের নিচে মাটি রাখেননি – রেখেছে কি?

সিটি সেন্টারে প্রমান সাইজ মানুষের মত
মূর্তিটাকে দেখে, সামনে দাড়াই – দেখতে থাকি
অসম্ভব এক নিজেকেই দেখি, কথা বলে না; হয়তো বলবার মতো মানুষ খোঁজে নেই;

হয়তো সেই মানুষ টাই – আসে পাশে – অন্য কোথাও – অন্য কোনো মূর্তি হয়ে
ঠায় দাঁড়িয়ে আছে – পেছন ফিরে – ওদিকেই তাঁর দৃষ্টি – এক দৃষ্টিতে

হবে হয়তো – কে জানে – কে বলতে পারে?

ক্যানবেরা (সিটি সেন্টার)
০৯/০৮/২০১৭