শাহরাস্তির বুকে, অপরূপ ডাকাতিয়া নদী!

ডাকাতিয়া একটি প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী নদী।বাংলা সাহিত্যের বিভিন্ন শাখা ও লোক কাহিনীতে পাওয়া যায় ডাকাতিয়ার নাম।ব্যাপক জনশ্রুতি রয়েছে এই নদীকে ঘিরে।ডাকাতিয়া নদী মেঘনা নদীর উপনদী।বাংলাদেশ ভারতের আন্তঃসীমান্ত নদী।

শাহরাস্তির উল্লেখযোগ্য,নদী “ডাকাতীয়া নদী”।শাহরাস্তি উপজেলা টি ডাকাতিয়া নদীর মাধ্যমে দ্বিখণ্ডিত হয়েছে।ডাকাতিয়ার উৎপত্তি ভারতের এিপুরা রাজ্যের পাহাড়ী এলাকায়।এর দৈঘ্য-২০৭ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত।এটি ভারতের এিপুরা থেকে উৎপত্তি হয়ে,”কুমিল্লা ও লাকসাম “উপজেলা অতিক্রম করে,”শাহরাস্তি ও হাজীগঞ্জ “উপজেলা অতিক্রম করে,চাঁদপুরে পদ্মা ও মেঘনা নদীর মোহনায় গিয়ে মিশেছে।যা লক্ষীপুরের হাজিমারা পর্যন্ত বিস্তৃত।এক সময় এই নদীই ছিলো শাহরাস্তি উপজেলার যোগাযোগ এর প্রধান মাধ্যম।বর্তমানেও সীমিত আকারে ডাকাতীয়া নদীর মাধ্যমে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে মালামাল পার করা হয়।বর্তমানে এই ডাকাতিয়া নদীর পানি দ্বারা কৃষি কাজ করা হয়।ফসলি জমিতে দিচ্ছে পানি সেচের ব্যবস্থা।এই নদীতে অনেক মাছ পাওয়া যায়,ফলে জেলেরা মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতে পারছে।

শাহরাস্তির বুকে,”অপরূপ ডাকাতিয়া নদীর”বিশেষ আর্কষনীয় দৃশ্য!ডলপিন মাছের মতো দেখতে ঠিক তেমনি একটি মাছ যাকে আঞ্চলিক ভাষায় “হু-মাছ” বলে।এই মাছ শাহরাস্তি উপজেলার খিলা বাজারের বুকে অবস্থিত অপরূপ ডাকাতিয়া নদীতে দেখা যেতো।এই মাছ দেখার জন্য সকাল ভোরে দর্শনার্থীরা আসতো।এই মাছটির বিশেষ “চমক! ছিলো যখন মানুষ ডাকতো তাকে তখনি সে ডলপিন মাছের মতো পানির উপরে লাপ দিয়ে দর্শনার্থীদের চমক দেখাতো।কিন্তু এই চমক এখন আর দেখা যায় না।তবে ডাকাতিয়া নদীর সৌন্দর্য যেন দিন দিন বেড়েই চলছে।ঈদ আসলেই যেন মেতে উঠে “অপরূপ ডাকাতিয়া “নদী। নদীতে ঘুরতে আসে দূর-দূরান্ত থেকে হাজারো পর্যটন কেউ বা আসে ট্রলার পিকনিক নিয়ে। কেউ বা ঘুরে নৌকা দিয়ে “অপরূপ ডাকাতিয়া”নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করে।জনসমুদ্রের মাঝে ডাকাতিয়ার সৌন্দর্য যেন আরো অপরূপ হয়ে ওঠে।

ডাকাতিয়া নদীর নামকরণ নিয়ে লোকমুখে বিভিন্ন মতামত শোনা যায়।”ডাকাতিয়া”শব্দটি শুনলে যেন মনে ভয়ের প্রবণতা সৃষ্টি হয়।ডাকাতের মতো সর্বগ্রাসী বলেই এর নাম হয়েছে ডাকাতিয়া।সম্ভবত ধারণা করা যায়,এই নদী দিয়ে মগ- ফিরিঙ্গি জলদস্যুরা নোয়াখালী ও কুমিল্লা জেলায় প্রবেশ করতো।এই নদীতে তাদের মাধ্যমে ডাকাতি হতো ডাকাতির উপদ্রবের কারণে নদীটির নাম ডাকাতিয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হয়।তৎকালীন কলকাতাস্থ ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কাউন্সিলের পক্ষে কোর্ট অব ডিরেক্টর সভার কাছে ১৭৫৮ খ্রিষ্টাব্দের ১০ জানুয়ারি পেশকৃত একটি চিঠির মাধ্যমে জলদস্যুদের উপদ্রবের চিএ পাওয়া যায়।

ডাকাতিয়ার সৌন্দর্যে আমরা মুগ্ধ!হে!”অপরূপ ডাকাতিয়া!”আমরা তোমার রূপ দেখবো বলে ভোরের সূর্যটা আড়াল করে রেখেছি।অপলক চোখে তাকিয়ে দেখি তোমার রূপ।হে!” অপরূপ ডাকাতিয়া!”আমাদের অশান্ত মনকে শান্তনা দেওয়ার জন্য তোমার পাশে গিয়ে বসি।

“অপরূপ ডাকাতিয়া নদী” আমাদের বেড়ে ওঠার প্রেরণা!ডাকাতিয়া’ই!আমাদের মন ও প্রাণের আশ্বাস।