অভিযান বন্ধে নেতারা শেখ হাসিনার অপেক্ষায়!

চলমান দুর্নীতি বিরোধী অভিযান আওয়ামী লীগের দুর্নীতিবাজ ধান্ধাবাজ নেতাদের ভেতর কাঁপন ধরিয়ে দিয়েছে। কোথায় কার কখন নাম এসে যায় ফাঁস হয় এ দুশ্চিন্তায় এসব নেতাদের ঘুম হারাম অবস্থা। দেশের ওয়াকিফহাল সূত্রগুলোর বক্তব্য এখন পর্যন্ত অভিযানে কোন রাঘববোয়াল ধরা পড়েনি। যারা এখন পর্যন্ত ধরা পড়েছে যাদের নাম বিভিন্ন গণমাধ্যমে এসেছে এরা মূলত সম্মুখ চরিত্র। পিছনের  হোমরাচোমরা কেউ এখনও ধরা পড়েনি। যুবলীগের সম্রাট এখন পর্যন্ত অনেকের আতংকের নাম। সম্রাটের গ্রেফতার-ক্রসফায়ার এখন পর্যন্ত আটকে রাখা হয়েছে। অভিযান শুরুর পর সম্রাট প্রথমে একটি হোটেলে আশ্রয় নেন। পরে গিয়ে ওঠেন যুবলীগের অফিসে। ক্যাডার বাহিনী তাকে রীতিমতো পাহারা দিয়ে রাখা হয়েছে। অনুগতরা এমনও বলছে সম্রাটকে ধরে নিতে হলে তাদের লাশের ওপর দিয়ে নিতে হবে। আওয়ামী লীগের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যাদের নাম উল্লেখ করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তাদের অন্যতম এই সম্রাট। তার গ্রেফতার ঠেকাতে ক্যাডার মহড়াকে শেখ হাসিনার কর্তৃ্ত্ব চ্যালেঞ্জ করা কিনা সে প্রশ্নও উঠেছে। পাশাপাশি এও বলা হচ্ছে শেখ হাসিনার চেয়ে শক্তিশালী এ দলে কেউ নেই। ছাত্রলীগের শোভন-রাব্বানীকে অপসারনের পরও এই সিদ্ধান্তকে বদলানোর মৃদু একটি চেষ্টা হয়েছিল। মধুর কেন্টিনের সামনে ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মীকে বসানোও হয়েছিল। শেখ হাসিনার বার্তা পাবার পর তারা দ্রুত এলাকাটি ছেড়ে চলে যান।

গত কয়েক বছর ধরে অবিশ্বাস্য দাপটে যুবলীগের সম্রাট নামটি ঢাকার অন্ধকার জগতের অন্যতম শীর্ষ ক্যাডার গডফাদার চরিত্র। শুধু ক্লাবপাড়ার জুয়া-ক্যাসিনো নয়, ঢাকার নানা খাত থেকে তার দাবিকৃত অর্থ তাকে পৌঁছে দিতে হতো। অর্জিত অর্থের বড় একটি অংশের ভাগবাটোয়ারাতেও তার কোন কৃপনতা ছিলোনা। এরজন্যে বলা হয়, এমন শেখ হাসিনা ছাড়া সম্রাট থেকে টাকা খেয়েছেন-ভাগ পেয়েছেন-নিয়েছেন প্রায় সব প্রভাবশালী নেতা। গণভবনের এবং প্রধানমন্ত্রীর দফতরেরও কিছু চরিত্রের নাম আছে এই তালিকায়। কেউ কেউ তাকে এক ধরনের রবিনহুডের বিশেষন দেবারও চেষ্টা করেন। ‘সম্রাট ভাই এই করেন সেই করেন।‘ প্রতিরাতে তার ক্লাবের সামনে কয়েকশ লোকের ফ্রি খাবারের ব্যবস্থা করতেন যুবলীগের নাম ব্যবহারকারী এই গডফাদার কথিত রবিনহুড! কিন্তু শেখ হাসিনার কাছে তার পরিচয় শুধু দুর্নীতিবাজ-চাঁদাবাজ। তাকে ধরার নির্দেশ দেবার পর কথিত রবিনহুড দৌড়ের ওপর আছেন। তার দেশত্যাগের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারী হয়েছে। বলা হচ্ছে সম্রাটের নুন খাওয়া আওয়ামী লীগ-যুবলীগের নেতা, পুলিশ-সাংবাদিক সবাই তার এখন ক্রসফায়ারের জন্য দোয়া করছেন। কারন গ্রেফতারের পর তার সত্যিকারের রিমান্ড হলে এদের মুখোশও খসে পড়তে পারে।

চলমান দুর্নীতি বিরোধী অভিযান নিয়ে শাসক দলের দুর্নীতিবাজ নেতাদের বেশি দুশ্চিন্তায় কারন এই অভিযান শুরুর কথা তারা ঘুনাক্ষরে জানতেননা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর একক সিদ্ধান্তে এই অভিযান শুরু করেছেন। গণভবনে একাধিক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে কিছুটা আভাস দিয়েছেন। কিন্তু দিন-তারিখ সম্পর্কে কিছুই বলেননি। তাদের ধারনা প্রধানমন্ত্রী যথেষ্ট হোমওয়ার্কের পর এ্যাকশনে নেমেছেন । ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারন সম্পাদক শোভন-রাব্বানীকে পদচ্যুত করার মাধ্যমে চলমান অভিযান শুরু হয়। কিন্তু খালেদ ভূঁইয়া, জি কে শামীম এদের আটকের মাধ্যমে দেশের মানুষ জানতে পারে শোভন-রাব্বানীর মতো শিশু চাঁদাবাজকে কুরবানির মাধ্যমে এই অভিযান শুরু হয়েছে।  

নেপথ্যের যে রহমান শোভনকে গৃহকর্মীর মতো ব্যবহার করতেন, তাকে দিয়ে নানাকিছু করাতেন,  সেই রহমানের গায়ে কিন্তু এখনও ফুলের টোকাটিও পড়েনি। এখন দুর্নীতিবাজ-চাঁদাবাজ রহমানের ঘুম হারাম হবার কারন তিনি মানছেন তার দূর্বৃত্তায়ন সবাই যেখানে জানে শেখ হাসিনা জানবেননা এটা কী করে হয়। আর রহমান এখন শোভনকে এই বলে আশ্বস্ত করতে চাইছেন যে তার কারনেই নাকি তাদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত মামলা হয়নি! তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়নি! প্রথমে খালেদকে গ্রেফতারের পর প্রকাশ পায় ঢাকায় শাসকদলের ছত্রছায়ায় লুকোনো জুয়া-ক্যাসিনোর অন্ধকার জগত। এত ক্যাসিনো ঢাকা শহরে আছে-ছিল, তা আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মীই জানতেন না।

নিজেদের লুকোতে নেপথ্যের প্রভাবশালী  কেউ কেউ ছোটদলের বড়নেতা রাশেদ খান মেননকে সামনে ঠেলে দেবার চেষ্টা করেন। এই চেষ্টা না হালে পানি না পাবার কারন এই মেনন ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা হলেও তিনি আসলে চৌদ্দ দলের প্রার্থী, নৌকা মার্কা এমপি। আওয়ামী লীগ মনোনয়ন আর নৌকা না দিলে ঢাকা থেকে তার পাশ করার কোন সুযোগ নেই। তার নির্বাচনী এলাকার সিংহভাগ নেতাকর্মী সব স্থানীয় আওয়ামী লীগসহ অঙ্গসংগঠন সমূহের। এলাকার এমপি হিসাবে তাকে শিখন্ডি বানিয়ে যারা যা করেছেন এদের এক-দু’জন ছাড়া কেউ ওয়ার্কার্স পার্টির নন। মেনন এর মাঝে ক্যাসিনো ইস্যুতে একটি উকিল নোটিশ পেয়েছেন। তিনি এসব জানতেননা এমপি হিসাবে তাকে দিয়ে শুধু একটি খেলার ক্লাব উদ্বোধন নির্মান করানো হলেও এর দায় তিনি এড়াতে পারেননা।

সূত্রগুলোর মতে ঢাকায় এক সময় চাঁদা-টেন্ডারবাজি সহ নানাকিছুর কর্তৃ্ত্ব ছিল মহানগর আওয়ামী লীগের নেতা  মায়ার কব্জায়। সেটি পরে তার হাত থেকে ছিনিয়ে নেন ভোলার শাওন এমপি। তার কাছ থেকে এই কর্তৃ্ত্ব সর্বশেষ যুবলীগের সম্রাটের দখলে চলে যায়। তার জুয়া-ক্যাসিনোর টাকাখোর নেতা থেকে পুলিশ-সাংবাদিক নামধারী নানাজন এখন সম্রাটের বালামুসিবত কিভাবে কমানো যায় সে গবেষনা করছেন।  সবার মুনাজাতের মূল খসড়ায় অনেকটা এমন বলা হচ্ছে,  ইয়া মাবুদ ধরা পড়লে যেন তাকে অস্ত্র উদ্ধারে নেয়া হয়। রিমান্ডে নিলে তাদের অনেকেরই মুখোশ খসে পড়তে পারে।   ঢাকার ক্লাবপাড়ার ক্যাসিনোর জগতটির অনেক কিছুই  সম্রাটের মাধ্যমেই বিকশিত। আওয়ামী লীগের সিনিয়র থেকে শুরু করে মন্ত্রী-এমপি নগর নেতা, গণভবনের ঘনিষ্ঠ তকমাওয়ালারাও যখন যা দাবি করেছেন তার কাছ থেকে তা পেয়েছেন। চলতি পরিস্থিতিতে এই উপকৃত ধান্ধাবাজরাই বেশি দুশ্চিন্তায়।

একজন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা এনু’র নিজের বাড়ি এবং সাঙ্গাপাঙ্গদের বাড়ির ভোল্টে লুকনো অর্থ-স্বর্নালংকার উদ্ধারের ঘটনা সবার ধারনার সীমা ছাড়িয়েছে। অবৈধ জগতের নিয়ন্ত্রন নিজের কর্তৃ্ত্বে রাখতে এনু তার পরিবারের এবং কর্মচারীদের ১৭ জনকে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে বসিয়েছিলেন। এক পরিবারে ১৭ নেতা এমন একটি তালিকা আমাদের কাছে এসেছে। এতে দেখানো হয়েছেঃ ১। রশিদুল হক ভূঁইয়া-সহ সভাপতি, ওয়ারী থানা আওয়ামী লীগ। ২। এনামুল হক ভূঁইয়া এনু-সহ সভাপতি, গেন্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগ ৩। রূপন ভূঁইয়া-যুগ্ম সাধারন সম্পাদক, গেন্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগ (এই তিন জন সহোদর), ৪। তানিম হক-সহ সভাপতি, ৪১ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ (ভাতিজা), ৫। বাতেনুর হক বাঁধন (রশিদের ছেলে), ৬। পাভেল রহমান-সহ সভাপতি, ৪০ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ (ম্যানেজার ওয়ান্ডার্স ক্লাব), ৭। মোঃ আসলাম, ক্রীড়া সম্পাদক, ৪০ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ, ৮। জাহাঙ্গীর আব্দুল্লাহ-যুগ্ম সম্পাদক, ৪০ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ (অস্ত্রের যোগানদাতা), ৯। মোঃ রাজ্জাক-বন ও পরিবেশ সম্পাদক, ৪০ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ, ১০। মোঃ হারুন-নির্বাহী সদস্য নং ২২, ৪০ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ, ১১। আফতাব উদ্দিন আফতাব-সাংগঠনিক সম্পাদক, ৪১ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ, ১২। মোঃ তারেক-কৃষি বিষয়ক সম্পাদক, ৪১ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ, ১৩। মোঃ রতন-ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক, ৪১ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ, ১৪। মনজুরুল কাদের মামুন-সাংস্কৃতিক সম্পাদক, ৪১ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ, ১৫। মিজানুর রহমান মিজান- যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক, ৪১ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ, ১৬। মোঃ মঞ্জু-সদস্য, ৪১ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ, ১৭। মোঃ কুতুব উদ্দিন-সদস্য, ৪১ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ (৬ নং থেকে ১৭ নং পর্যন্ত মানুষগুলোর সবাই ওয়ান্ডার্স ক্লাব ও নারিন্দা লায়ন্স ক্লাবের কর্মচারী। এমন তালিকা দেখিয়ে বলা হচ্ছে এটি একটি নজির মাত্র। এমন তালিকা এখন এলাকায় এলাকায় ভুরিভুরি।

বলা হচ্ছে শেখ হাসিনা বিরোধীদলের নেত্রী থাকতে তাকে পানি খাওয়াতেন এমন দাবিওয়ালাও একজন এখন টাকায় লাল! আগে বন বেচে বাদ পড়া ব্যক্তিটি এখন সরকারের ভাবমূর্তি দেখেন। নানকের মেয়ের কাছে সরকারের পাওনা কয়েকশো না কয়েক হাজার কোটি টাকা, এটি নেপথ্যে তুমুল বিতর্কের বিষয়। কুষ্টিয়ার নেতার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের পরিমান আসলে কত তা নিয়ে নানান অংক বলা হয়। কেউ আসল অংক কেউ জানেনা। ওবায়দুল কাদেরের অসুস্থতা দেখিয়ে একজন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক হতে চান। কিন্তু তার ব্যাপারে চাউর অভিযোগটি হলো তিনি নাকি ইউপি কমিটি অনুমোদনেও টাকা খাওয়ায় অরূচি দেখাননা। গত দশবছরে তরুন এক ছোট মন্ত্রীর সম্পদের অর্জন নিয়ে এরমাঝে এক মিডিয়ায় রিপোর্ট হয়েছে। তার আমেরিকার বাড়ির তথ্য কিভাবে ওই রিপোর্টে বাদ পড়লো তা নিয়েও কথা হচ্ছে। চাঁদপুরের নেত্রীর তথ্যে অনেকে চমকে যাচ্ছেন। বলা হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী তাকে ভালোবেসে বিশ্বাস করে তাকে ফিরিয়ে আনার এই বুঝি বিনিময়! মেঘনা পাড়েও সিন্ডিকেট!

দুর্নীতির নানা বিষয়ের সঙ্গে গুরুত্বের সঙ্গে যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে তাহলো শেখ হাসিনার সঙ্গে দল এবং অঙ্গ সংগঠন সমূহের সুবিধাবাদী নেতাকর্মী, পেশাজীবী নেতাদের বিশ্বাসঘাতকতা। পচাত্তরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পর ছিন্নবিচ্ছিন্ন আওয়ামী লীগকে নিরলস পরিশ্রমী নেতৃত্বের মাধ্যমে পুনর্গঠিত করে ক্ষমতায় ফিরিয়ে এনেছেন শেখ হাসিনা। গত দশবছর ধরে তাঁর নিরলস নেতৃত্বের কারনে দল ক্ষমতায়। কোথাও কেউ কোনদিন শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনতে পারেনি। ১/১১ এর সময় যে সব অভিযোগ আনা হয়েছিল তা কেউ বিশ্বাস করেনি, কিন্তু দশ বছরে আওয়ামী লীগের নাম ভাঙ্গিয়ে হাজার হাজার নেতাকর্মী, পেশাজীবী নেতা ফকির থেকে আমীর হয়েছেন। এর অনেক কিছু এখন জনগনের কাছে প্রকাশ্য এবং ক্ষোভের বিষয়। আর এসবকিছু চলে বদনাম যাচ্ছে শেখ হাসিনার প্রযত্মে। প্রধানমন্ত্রীর দফতরের সব কর্মকর্তাও সাধু নন।

 গোয়েন্দা সূত্রগুলোর নানান রিপোর্টের ভারে ক্ষুদ্ধ হতে হতে অতঃপর অভিযানের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তটি শেখ হাসিনা  একাই নিয়েছেন। অভিযান শুরুর পর ভীতসন্ত্রস্ত নেতারা আড়ালে একান্তে নানান আলাপ শুরু করেছেন। কেউ কেউ বলছেন দুর্নীতি করেছে সবাই। কিন্তু শুধু রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের জনগনের কাছে হেয় করা হচ্ছে। পুলিশ-প্রশাসনের দুর্নীতিবাজরা অরক্ষিত থেকে যাচ্ছে। যুবলীগের চেয়ারম্যান আর চট্টগ্রামের এক হুইপের বিস্ফোরক প্রতিক্রিয়া এমন আলোচনারই বহিঃপ্রকাশ। গেন্ডারিয়ার আওয়ামী লীগ নেতা এনুর বাড়ি থেকে অবিশ্বাস্য পরিমানের অর্থ-স্বর্নালংকার উদ্ধারের পর র্যাবের এক কর্মকর্তার কথা বলার ধরনে কেউ কেউ সামরিক শাসনেরও গন্ধ খোঁজেন। কিন্তু সেনাবাহিনী প্রধানের বক্তব্যের পর এই পক্ষের মুখ কিছুটা বন্ধ হয়েছে। সেনা প্রধান অভিযানের জন্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করে বলেছেন, এতে করে অপরাধ কমে আসবে। এরপরও স্বস্তিতে নেই দল। বেশিরভাগ নেতাকর্মী বিব্রত। পরিস্থিতির শেষ কোথায় তা কেউ জানেননা।

এ নিয়ে কথা বলতে গেলে ঢাকা থেকে বলা হলো পিঠবাঁচাতে দুর্নীতিবাজ নেতারা নিজের মধ্যে দফায় দফায় বৈঠক করছেন। এই বৈঠকগুলোও গোপন রাখা হচ্ছে।  তারা এই অভিযানের অবসান চান। তাদের মতে এই অভিযান এভাবে চললে রাজনৈতিক প্রশাসনিকভাবে দল বিপদে পড়ে যাবে। সামরিক শাসনের আশংকাও করা হচ্ছে। এরমাঝে দুই-তিন কোটি টাকার জন্যে খালেদা জিয়ার জেলে থাকা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরলে এ নিয়ে কারা তার সঙ্গে আলাপ করতে যাবেন, প্রধানমন্ত্রী না ডাকলে কারও যাওয়া উচিত কিনা তা নিয়েও এই নেতারা সিদ্ধান্তহীন। কারন শেখ হাসিনাকে তারা চেনেন জানেন। তাকে প্রভাবিত করার মতো কোন নেতা এখন আওয়ামী লীগে নেই। দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযানকে কেন্দ্র করে দেশে প্রধানমন্ত্রীর জনপ্রিয়তা বেড়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগে সৃষ্টি হয়েছে গুমোট অবস্থার। কারন এ দলের নেতাকর্মীদের বেশিরভাগ এখন আর শেখ হাসিনার স্পিরিটকে ধারন করেননা। লোভ আর দুর্নীতি তাদের মূল্যবোধকে গ্রাস করেছে। অগ্রসরমান বাংলাদেশের সামনে এটি এখন নতুন এক সংকটের নাম।